নাটোরের বড়াইগ্রামে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় আব্দুল করিম লোহানী (৫৫) নামে এক এসএসসি পাস ভূয়া ডাক্তারকে আটক ও হাসপাতাল সিলগালা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার জোনাইল বাজারে জাহাঙ্গীর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খুরশীদ আলম স্থাণীয় পুলিশের সহায়তায় এ কাজ করেন। একই সাথে তিনি বাদি হয়ে সে রাতেই থানায় শিশু মৃত্যু ও ভূয়া চিকিৎসক সাজার অভিযোগে আব্দুল করিম লোহানী এবং হাসপাতাল মালিক জাহাঙ্গীর আলমের নামে মামলা দায়ের করেছে।
তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালটি একই অভিযোগে এর আগেও বন্ধ করা হয়েছিলো। যেহেতু এটি লাইসেন্সভুক্ত তাই কিছু শর্তে খুলে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু এখন লাইসেন্স বাতিলসহ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লোহানীর গ্রামের বাড়ী উপজেলার চকপাড়া এলাকায় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগে বড়াইগ্রাম প্রাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে সেনাবাহিনীর সৈনিক হিসেবে যোগদেন আব্দুল করিম। অসদাচরণের কারণে কিছুদিন পরেই চাকরিচ্যুত হন। পরে তিনি শ্বশুরবাড়ি এলাকায় সদর থানার দত্তোপাড়া এলাকায় বসবাস শুরু করেন। তার কিছুদিন পরে বগুড়ায় যান কাজের সন্ধানে।
এরপর তিনি রাতারাতি চিকিৎসক বনে যান। একই সাথে বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে প্রচার শুরু করেন। তার নেমপ্লেটে দেখা যায় তিনি লিখেছেন, এমবিবিএস (রাজ), বিসিএস (স্বাস্থ্য), পিজিটি (সার্জারি), পিজিটি (গাইনী এন্ড অব্স), সিএমইউ (আল্ট্রা) ও প্রাক্তন জেনারেল সার্জন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এর কোনটিই সঠিক নয়। প্রকৃত হলো তিনি বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। এর বাহিরে কোন পড়ালেখা নেই। আরও জানা গেছে, আব্দুল করিম লোহানী কিছুদিন আগেও রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় একটি রুগি মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন।
আব্দুল করিমের ভাই ফিরোজ আহম্মেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি যখন ছোট ভাই সেনাবাহিনীতে চাকরি করতো। তার চাকুরি চলে যাওয়ার পর নাটোরে থাকে। কোন মেডিকেলে লেখাপড়া করছেন বলে আমার জানা নাই।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সিদ্দিক বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে খবর পেয়ে একজন ভুয়া ডাক্তারকে আটক করা হয়। পরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খুরশীদ আলম জাহাঙ্গীর হাসপাতালের মালিক জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল করিম লোহানীর নামে মামলা দায়ের করেছেন। এখন হাসপাতাল মালিককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সূত্র: দৈনিক শিক্ষা