শিক্ষাজব ডেস্ক:
চাকরিতে নিয়মবহির্ভূতভাবে ছুটি কাটানো ও পদোন্নতি, ব্যক্তিগত কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের অবৈধ ব্যবহার করেছেন। এক ধরনের ছুটি নিয়ে পরে অন্য ধরনের ছুটিতে পরিবর্তন। করোনার সময়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কোনো ছুটি না নিয়েই অস্ট্রেলিয়া গিয়ে প্রায় ৩ মাস পর দেশে ফিরেছেন। এমন নানা অভিযোগ উঠেছে গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক শাহীন হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তিনি গত ১০ বছরে বিভিন্ন মেয়াদে প্রায় সাড়ে ৭ বছর ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গেছেন। তার এ লাগাতার ছুটির কারণে শিক্ষা ও দাফতরিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলে মনে করেন শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শাহীন হাসান পোস্টডকের জন্য দুই বছর, লিয়েন হিসেবে ৫ বছর এবং প্রায় ৮৫০ দিন অর্জিত ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গেছেন। বর্তমানে তার কোনো অর্জিত ছুটি নেই। এছাড়া বিনা বেতনে, অর্ধ গড় বেতনসহ নানা নামে তিনি আরও অনেক ছুটি কাটিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রিচার্স ফেলো হিসেবে গবেষণার জন্য শাহীন হাসানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ২ বছরের ছুটি মঞ্জুর করে ডুয়েট প্রশাসন। পরে তিনি আবেদন করে ছুটি কার্যকর হওয়ার তারিখ পরিবর্তন করেন। পরে ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তার ২ বছরের ছুটি কার্যকর হয়। অস্ট্রেলিয়ায় ছুটি থাকা অবস্থায় তিনি আরও দু’বার মোট ছুটি বাড়িয়ে ১ হাজার ১৩৯ দিন ছুটি ভোগ করেন।
সর্বশেষ করোনা মহামারীর সময়ে ২৯ মার্চ আবারও অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য ভিসির কাছে ছুটির আবেদন করেন তিনি। কিন্তু ওই সময় সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার সরকারি নির্দেশনা থাকায় ভিসি তার ছুটি মঞ্জুর করেননি। শাহীন হাসান এসবের তোয়াক্কা না করেই অস্ট্রেলিয়া চলে যান। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চিঠির প্রেক্ষিতে ৯ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
শাহীন হাসান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি আমি কখনও কারও প্রভাব খাটাইনি। আমার প্রভাবশালী কেউ নেই। যথাযথ নিয়ম মেনেই বিভিন্ন সময়ে ছুটি নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি এবং গেস্ট হাউসও ব্যবহার করেছি প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই।
ভিসি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলাউদ্দীন বলেন, তিনি অনুমতি না নিয়েই করোনা মহামারীর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে প্রায় ৪ মাস ছিলেন। এর আগেও নানা অজুহাতে ছুটি নিয়ে বাইরে গেছেন। তিনি অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ও গেস্ট হাউস ব্যবহার করেছেন। তাকে চিঠি দিয়েছি। সিন্ডিকেটেও এ বিষয় উঠাতে চেয়েছি। তার প্রভাবের কারণে তা পারিনি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নিয়মকানুনই মানেন না। কিছু বলতে গেলেই চড়াও হন। তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অসহায়।