বাগেরহাটের মোংলায় ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা করে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কিশোরীর (১৭) পরিবার। মামলার প্রায় ৪ মাস অতিবাহিত হলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু গ্রেফতার করছে না পুলিশ। উল্টো মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে এখন পালিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নির্যাতিতা কিশোরী।
শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) ধর্ষণের শিকার অসহায় কিশোরী সময় সংবাদকে জানায়, মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের উত্তর হলদিবুনিয়া গ্রামের ড. জুলিয়ান বৈরাগীর ছেলে সুবির বৈরাগীর সঙ্গে তার আগে থেকেই পরিচয়। প্রায়ই কিশোরীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো সুবির বৈরাগী। এক পর্যায় সুবিরের সঙ্গে কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ে করার প্রলোভন দিয়ে দিনের পর দিন কিশোরীকে ধর্ষণ করে আসছিল ওই যুবক।
এছাড়াও কিশোরীর সঙ্গে ধর্ষণের দৃশ্য গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে বলে প্রায়ই ভয় দেখাতো সুবির অভিযোগ করেন কিশোরী।
সবশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে জরুরি কাজের কথা বলে বাসায় ডেকে কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে যুবক সুবির বৈরাগী। এ ঘটনা কাউকে বলা হলে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখায় সুবির।
এ ঘটনার পর পরই সুবিরের বড় ভাই সোহাগ ও মা সপ্না বৈরাগীর কাছে জানালে তারা কিশোরীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
পরে ওইদিন রাতে কিশোরী মোংলা থানায় অভিযোগ করলে স্থানীয় রাজীব বৈরাগীর সহায়তায় মিজান মোল্লা, জিম হালদার, জেবিয়ার বৈরাগী, অনুজ হালদার, দিলিপসহ কয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ঘটনা স্থানীয়ভাবে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে কিশোরীকে দুশ্চরিত্র অপবাদ দিয়ে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয় বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন নির্যাতিতা কিশোরী।
পরে ১২ সেপ্টেম্বর ওই কিশোরী সুবির, সোহাগ ও সপ্না বৈরাগীর বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। তবে মামলার ৪ মাস অতিবাহিত হলেও আসামিদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
এদিকে মামলা তুলে না নিলে আসামি ও তাদের সহযোগীরা এসিড মেলে ঝলসে দেওয়ারও হুমকিও দিচ্ছে বলেও কিশোরী অভিযোগ করেন।
এছাড়া এ মামলার ২নং আসামি সোগাহ বৈরাগী খুলনার একটি হাসপাতালে চাকরির কারণে ধর্ষণের আলামত ও ডাক্তারি রিপোর্টও পাল্টে দেয়া ও মামলা তুলে নেয়ার ভয় দেখাচ্ছে আসামিদের সহযোগীরা।
এ ব্যাপারে মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, হলদিবুনিয়া এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় এ কর্মকর্তা।
সূত্র : সময় সংবাদ