রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন বিভাগের সামনে এভাবেই শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, এভাবে পড়তে ভালো লাগে তাদের। এতে আড্ডাও হয়। ক্লাসে বুঝতে না পারা পড়াগুলো মূলত গ্রুপ ডিসকাশনের মাধ্যমে বুঝে নেন তারা। এছাড়া কেউ কেউ এখানে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পড়াও পড়ে।
সরেজমিন দেখা যায়, মাঠজুড়ে শিক্ষার্থীদের ৩০ থেকে ৪০টি দল রয়েছে। প্রতি দলে তিন থেকে সাতজন করে শিক্ষার্থী। কেউ কেউ ঘাসের ওপর খবরের কাগজ বা পলিথিন পেতে বসেছে। কেউবা স্যান্ডেল পেতে বসে পড়েছে। এ দৃশ্য এক অন্যরকম আবেদন সৃষ্টি করে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ সত্যই মুগ্ধ করার মতো। এখানে শুধু রাজশাহী কলেজই নয়, আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন বিষয়ে বুঝতে ও পড়তে আসেন। কেউ কেউ সহপাঠীর কাছ থেকে বুঝে নেন। কেউ প্রাইভেট পড়েন নিজ বিভাগের বড়ভাই বা বোনের কাছে।
এই মাঠটি সারা বিকাল শিক্ষার্থীদের পদভারে ভরে থাকে। শিক্ষার্থীদের মতে, পড়াশোনার এমন চিত্র শিক্ষা নগরী রাজশাহীই উপহার দিতে পারে। শিক্ষার প্রতি এমন মনোযোগই শিক্ষার্থীদের মেধাবী করে গড়ে তুলেছে। তাই একবার নয়, কয়েকবার দেশ সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম অর্জন করেছে রাজশাহী কলেজ- এমনটি বলছেন শিক্ষকরা।
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান বলেন, এই ক্যাম্পাসের পরিবেশ অসাধারণ। সবাই পড়াশোনায় ব্যস্ত। এখানে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না বোঝা অধ্যায়গুলো একে অন্যকে দেখিয়ে দেয়, বুঝিয়ে দেয়।
সিয়াম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে আড্ডা দেওয়া হয়। পড়াশোনাও হয়। বলা যায়, আড্ডার মাঝে পড়া। প্রতিদিন অনেক শিক্ষার্থী এখানে পড়তে বসে। শীতের হালকা ঠাণ্ডার মধ্যে রোদের উষ্ণতায় বসে পড়তে ভালো লাগে। বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গেও দেখা হয়।
শিক্ষার্থী জয়ার মা তামান্না ইসলাম বলেন, মাঠে বসে মেয়ে পড়াশোনা করছে বন্ধুদের সঙ্গে। আমি অন্য অভিভাবকদের সঙ্গে গল্প করছি। এতে আমারও সময় কাটে আর মেয়ের লেখাপড়াও হয়। বেশির ভাগ সময় জয়া একাই আসে। পড়া শেষে এলাকার কোনো মেয়ের সঙ্গে বাড়ি চলে যায়।
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মুহা. হবিবুর রহমান বলেন, ৩টার পর মাঠ পুরো ভরে যায়। অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরাও এখানে আসে। এখানে কেউ চাকরির পরীক্ষার পড়া পড়ে, কেউ একাডেমিক পড়া পড়ে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ভাষা শেখার জন্য চর্চা বেশি হচ্ছে। এখানে ইংরেজি ও হিন্দি ভাষা শেখে ছেলেমেয়েরা। হিন্দি ভাষা শেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতে স্কলারশিপে লেখাপড়ার সুবিধা পাওয়া। অনেক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে, তাদের লেখাপড়া শেষ। এখনও চাকরি হয়নি। তারা এখানে পাঁচ থেকে ছয়জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়িয়ে কিছু টাকা আয় করছে।
শিক্ষাজব ডটকম’র পাঠকদের জন্য আরকাইভ থেকে সংবাদটি আবার প্রকাশ করা হলো।