একসময়ের প্রতাপশালী শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট যেন ক্রমেই হারাতে বসেছে তাদের গৌরব। প্রতিপক্ষের বুকে থরকাঁপুনি তুলে দেওয়া দলটি এখন দিশেহারা অবস্থা । এক যুগে হয়েছে নানা রদবদল । ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর সাঙ্গাকারা, জয়াবর্ধনে, দিলশান, মালিঙ্গাদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা অবসরে যাওয়ায় নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে লঙ্কানরা।
সম্প্রতি দেশটির ক্রিকেটে দূর্নীতির কালো ছায়া পড়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ আছে বোর্ড কর্তাদের সাথে রেষারেষি জেরে বর্তমান দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দীনেশ চন্ডিমালদের মতো ক্রিকেটারদের দলের বাইরে রাখা হচ্ছে। পুরনোদের রেখেই রেখেই হচ্ছে দল ঘোষনা । অভিজ্ঞদের বাদ রেখে বর্তমান ইয়াং স্টারদের দল পারছে না চাহিদা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত জয় । যার ফলে পারফরম্যান্স অনুযায়ী বেতন কাঠামো তৈরি করেছে লঙ্কান বোর্ড। ৩০-৪০ শতাংশ বেতন কমিয়ে দেয়ায় কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব মেনে না নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলারও ডাক দিয়ে রেখেছেন ম্যাথুসরা। বোর্ডের নানাবিধ কর্মকান্ডের প্রভাব এসে পড়ছে প্লেয়ারদের পারফর্মেন্সে।
সাম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে কুসাল পেরেরা বাহিনী। নূন্যতম প্রতিরোধটুকু গড়তে পারেনি তাঁরা। ইংলিশদের বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশ হয় লঙ্কানরা। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষেও ওয়ানডে সিরিজ হার। ইংলিশদের বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশে সমর্থকদের মাঝে তৈরী হয়েছে নানা প্রশ্ন, হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তারা আনফলো করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজ ।
এক টুইট বার্তায় মাতারা হ্যারিকেন লিখেছেন,
“এটি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের জন্য অত্যন্ত দুঃখের দিন। পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। ক্রিকেট বাঁচাতে আমাদের তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।”
এর আগেও উত্তরসূরিদের বিভিন্ন সময় উদ্বুদ্ধ করেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুইটি হারের পর যখন তামিম ইকবালরা লঙ্কানদের হোয়াইট ওয়াশের চোখ রাঙানি দিচ্ছিলো, ঠিক তখনই এক টুইট বার্তায় উত্তরসূরিদের জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের কাছে হোয়াইট ওয়াশ হলে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের মান-মর্যাদা সবই ডুবে যাবে।
যদিও পরে জয়সুরিয়ার বার্তায় উদ্বুদ্ধ লঙ্কা বাহিনী শেষ ম্যাচ ৯৭ রানে জিতে হোয়াইট ওয়াশ এড়িয়েছিল। তবে এবার ক্রিকেট বাঁচানোর ডাকে জয়সুরিয়া তার টুইটে পরিষ্কার করে কিছু না লিখলেও বোঝা যাচ্ছে এবারের ডাক নির্দিষ্ট কোনও ম্যাচকে ঘিরে নয়। লঙ্কান ক্রিকেটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতেই! জয়সুরিয়ার এই ডাক কতটা ফলপ্রসূ হবে সেদিকেই চোখ থাকবে সবার।